সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে এই সম্পর্কে বিস্তারিত

সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য বা আলোচনা যারা জানতে চান তারা অবশ্যই আমার এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। 

আমার এই আর্টিকেল থেকে সিজারের সম্পর্কে অনেক তথ্যই পেয়ে যাবেন যেটা থেকে আপনার আশা করি কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন। 

তাই আপনারা যারা সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে এ বিষয়ে জানতে চান অথবা সিজারের পর আরো কিছু জটিল সমস্যার বিষয় জানতে চান তারা অবশ্যই আর্টিকেলটি পড়বেন। 

আমরা শুরুতেই যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব সেটি খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তাহলে চলুন জেনে নেই। 

সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে এই সম্পর্কে বিস্তারিত


সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে

সিজারের পর অনেক রকমের সমস্যা হয়ে থাকে তার থেকে জটিল যে বিষয় গুলো জানা খুবই জরুরী সে বিষয়ে আপনাদের জানাবো। 

সিজারের পর জটিল ৫ টি সমস্যা দেখা দিতে পারে

{ ১ } এন্ডোমেট্রাইটি্স

এই ধরনের অপারেশনের পরে ইউটেরাস ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি দেখা দেয়। 

যদি সিজারিয়ান সেকশন এরপর ব্যাকটেরিয়া ইউটেরাস এ যে ইনফেকশন বা সংক্রমণ এর সৃষ্টি করে তাকে মেডিকেল এর ভাষায় বলা হয় এন্ডোমেট্রাইটি্স। 


{ ২ } পোস্ট সিজারিয়ান ইনফেকশন

এই অপারেশন এরপর শুধুমাত্র যে ইউটেরা এর সম্ভাবনা থাকে তা না বাইরের চামড়ার স্তরে ও অনেক সময় এটা দেখা দেয়। 

একে প্রায়ই বলা হয় পোস্ট সিজারিয়ান ইনফেকশন এতে জ্বর পেটে ব্যথা এর সাথে দেখা দিতে পারে। 

চামড়ার বা টিস্যুর অন্য যে কোন স্তরে ইনফেকশন সাধারণত এন্টিবায়োটিক দিয়ে সারানো হয়। কিন্তু যদি এই ধরনের ক্ষত খুব দ্রুত সারানোর না হয় তবে সেটা সহজেই গা বা পুঁজ এর সৃষ্টি করতে পারে। 


{ ৩ } রক্তপাত

কখনো কখনো অন্য কোন জটিলতা থেকেও অনেক বেশি রক্তপাত হতে পারে, সিজারিয়ান ডেলিভারিতে এই ধরনের জটিলতা কে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয়, পোস্ট প্যারটাম হেমোরেজ। 

যখন শরীরে কোন অঙ্গ কাটাছেঁড়া করা হয় কিন্তু রক্তনালী সঠিকভাবে সেলাই করা না হলে অথবা প্রসব যন্ত্রণার কোন জরুরী পরিস্থিতিতে রক্তপাত দেখা দিতে পারে। 

যদি এই জটিলতার সম্ভাবনা দিন দিন কমে আসছে তাও অন্তত ৬% ডেলিভারি তে এটি এখনো দেখা যায়। 


{ ৪ } রক্ত জমাট বাধা

সম্ভবত এটিকেই সবচেয়ে ভীতিকর জটিলতা হিসেবে ধরা হয়, অনেক সময় এই জমাট বাঁধা রক্ত ফুসফুস ও ছড়িয়ে যেতে পারে। 

তাই এটিকে অনেক উন্নত দেশেও মায়ের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়ে থাকে। 


{ ৫ } ওষুধে প্রতিক্রিয়া

কিছু কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে ওষুধ বা অ্যানেস্থেসিয়া এর কারনে পরবর্তী সন্তান ধারণ অসম্ভব হয়ে পড়ে।

তারপরও মা যদি সুস্থ হয় ওঠে সিজারের পরে তাও পরবর্তী সন্তান ধরনের যথেষ্ট ঝুঁকি থেকে যায়। 

এই ধরনের সার্জারি ইউটেরাস বা জরায়ুকে দুর্বল করে ফেলে তবে আসার কথা এটাই যে, এখন এ ধরনের সিজারের পরে সন্তান গ্রহণ আগের চেয়ে অনেক নিরাপদ। 


সিজারের পর পেট কমানোর উপায়

সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে এই সম্পর্কে বিস্তারিত

আপনাদের মধ্যে যাদের সিজারের পর ওজন বৃদ্ধি পায় অথবা ভুঁড়ি বেড়ে যায় তারা হয়তো অনেকেই জানেন না কিভাবে এটি কমানো যায়। 

তা আজকে আমি আমার এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানিয়ে দেবো এই আর্টিকেলে পাবেন কিভাবে আপনার পেট কমাবেন অথবা ওজন কমাবেন। 

[ ১ ] সিজারের পর ওজন কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করানো। 

বাচ্চাকে ছয় মাস শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে এর সাহায্যে আপনার পেটের অনেক অতিরিক্ত মেদ কমে যাবে। 

[ ২ ] শিশুর জন্মের 6 সপ্তাহ পর থেকে ব্যায়াম শুরু করতে পারেন ছয় সপ্তাহের আগে পেটের ব্যায়ামগুলো কোন অবস্থাতেই করা যাবে না। 

শিশুর জন্ম সিজেরিয়ান এর মাধ্যমে হোক আর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হোক মায়ের পক্ষে যখনই স্বাভাবিক কাজকর্ম করা সম্ভব হবে, তখন থেকেই সেসব কাজ শুরু করতে হবে। 

[ ৩ ] ডেলিভারির পরে প্রথম ছয় মাস অন্তত গুরুত্বপূর্ণ, এ সময় ভারী ব্যায়াম করা যায় না তবে সাধারণ ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। 

যেমন হাটা শিশুর জন্মের তিন মাস পর থেকেই দিনে ৪৫ মিনিট করে হাঁটাহাঁটি করা ভালো চাইলে কিছু ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করতে পারেন। 

[ ৪ ] ছয় মাস পর থেকে অন্য ব্যাংক শুরু করা ভালো তবে হালকা দিয়ে শুরু করা উচিত তবে পেটের ব্যায়ামগুলো ৮-৯ মাস পর শুরু করা ভালো। 

[ ৫ ] খাওয়া ঘুমানো ও গোসল ছাড়া সব সময় থাকুন এটা অনেক বিরক্ত কর হলেও আপনি অবশ্যই ভালো ফল পাবেন। 

[ ৬ ] শুনে অবাক হবেন যে পানি দেহে থেকে অতিরিক্ত বের করে দিতে সাহায্য করে তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন এতে ক্ষুধা কম লাগবে ও পেট ভরা থাকবে। 

[ ৭ ] ভাত মিষ্টি সহ এ ধরনের অন্যান্য খাবার অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া যাবে না। বিশেষ করে যারা গর্ভধারণের আগে থেকেই একটু মোটা হয়ে গিয়েছেন। তাদের এ ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। 


সিজারের পর ইনফেকশন হলে করণীয়

অনেকেই আছেন যাদের সিজারের পরে ইনফেকশন হলে সামান্য কিছু ব্যথার ওষুধ অথবা অন্য কোন ওষুধ খেয়ে নেয়। 

কিন্তু আমি বলব এসব করা একদমই ঠিক নয় কেননা এটা খুব একটি সেনসিটিভ বিষয় তাই অবশ্যই এটা জেনে নেওয়া ভালো। 

সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দিলে কোন ভাবে এটি অবহেলা করা উচিত নয় দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। 

অথবা আপনি যেই ডাক্তারের মাধ্যমে সিজার করিয়েছেন সেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ওষুধগুলো সেবন করতে পারেন। 

কাটা অংশ থেকে যদি পুঁজ বের হয় তাহলে টেস্টের মাধ্যমে নির্বাচন করে ডাক্তারের প্রয়োজনীয় এন্টিবায়োটিক অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উচিত। 

প্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা সিজারের পর কি কি সমস্যা হতে পারে এর বিস্তারিত তথ্য আমার এই আর্টিকেলে দেওয়া হয়েছে। 

আশা করব আপনারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জানতে সক্ষম হয়েছে। 


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post