পাইলস এর চিকিৎসা কোথায় ভালো হয়

পাইলস এর চিকিৎসা কোথায় ভালো হয় এ সম্পর্কে যারা জানতে চেয়েছেন তারা আমার এই আর্টিকেলে পেয়ে যাবেন। 

এছাড়াও আরো অনেক বিষয়ের উপরে এই আর্টিকেলে দেওয়া হল আশা করব আপনারা আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার পরে। 

পাইলস এই বিষয়ে অনেক তথ্যই জানতে পারবেন তাহলে চলুন আজকে আর্টিকেলটি শুরু করা যাক, শুরুতেই পাইলসের চিকিৎসা কোথায় ভালো হয় এটি জানতে চেয়েছে। 


পাইলস এর লক্ষণ

পাইলস রোগে যেসব লক্ষণ দেখা যায় তা হচ্ছে- পায়ুপথের অন্ত্র বা ভেতরের পাইলস রোগে সাধারণত তেমন কোনো ব্যথা বেদনা, অস্বস্তি থাকে না। 

অন্যদিকে পায়ুপথের বহিঃঅর্শরোগে পায়ুপথ চুলকায়, বসলে ব্যথা করে, পায়খানার সঙ্গে টকটকে লাল রক্ত দেখা যায় বা শৌচ করার টিস্যুতে তাজা রক্ত লেগে থাকে, মলত্যাগে ব্যথা লাগা, পায়ুর চারপাশে এক বা একের অধিক থোকা থোকা ফোলা থাকে।


পাইলসের সাধারণ লক্ষণগুলি এখানে:

 পায়ূ অঞ্চলে ব্যথা এবং চুলকানি। 

 মল বা মলত্যাগের পর রক্ত।

 মলদ্বারের চারপাশে একটি শক্ত  গলদা।


অভ্যন্তরীণ অর্শ্বরোগের লক্ষণ:

 মল অতিক্রম করার সময় অতিরিক্ত চাপ বা  জ্বালা হতে পারে।

 মলত্যাগের সময় ব্যথাহীন রক্তপাত।

 যদি পাইলস প্রল্যাপস, ব্যথা এবং জ্বালা হয়।

 

বহিরাগত অর্শ্বরোগের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

 মলদ্বারের চারপাশে চুলকানি।

 মলদ্বারের কাছে বেদনাদায়ক মাংসল গলদ।

 বসার সময় ব্যথা বা অস্বস্তি।

 মলদ্বারে রক্তক্ষরণ।

 

পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ 

পাইলস ফিস্টুলা এনাল ফিশার মলদ্বারের জটিল রোগ। অনেকে এগুলোকে এক রোগ মনে করে গুলিয়ে ফেলেন। এ রোগে মলদ্বার থেকে মাঝে মধ্যে রক্ত যায়।

 কখনো বেশি কখনো কম। মলত্যাগের সময় অনেকের মলদ্বার ফুলে ওঠে আবার কারো কারো মাংশপিন্ড ঝুলে পড়ে যা আবার আপনা আপনি ভেতরে ঢুকে যায় অথবা চাপ দিয়ে ঢুকিয়ে দিতে হয়।


প্রশ্ন হচ্ছে এর চিকিৎসা ও প্রতিকার কি? 

এ রোগীরা অনেক সময় প্রতারণার শিকার হয়ে আসছেন। 

পাইলসের চিকিৎসায় অনেকে মলদ্বারে বিষাক্ত কেমিকেল ইনজেকশন দিচ্ছেন যাতে মলদ্বারে মারাত্মক ব্যথা হয় এবং মলদ্বারের আশেপাশে পচন ধরে এবং এ জন্য রোগী অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশা ভোগ করেন।

পরিনামে কারো কারো মলদ্বার সরু হয় এবং বন্ধ হয়ে যায়। তখন পেটে মলত্যাগের বিকল্প পথ করে দিয়ে ব্যাগ লাগিয়ে দিতে হয়। আবার কোনো কোনো হাতুড়ে চিকিৎসক বিষাক্ত কেমিকেল পাউডার দেন। 

যা মলদ্বারে লাগালেও মলদ্বার পঁচে ঘা হয়ে যায় এবং রোগীর একই পরিণতি হয়। রোগীরা যখন বিনা অপারেশনের কথা শোনেন তখন এ জাতীয় চিকিৎসার জন্য প্রলুব্ধ হন।

লেজার সার্জারির মাধ্যমেও ধনন্তরী পাইলস চিকিৎসা হচ্ছে। বিষয়টি মোটেই সত্য নয়। কারণ, এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে লেজারের মাধ্যমে পাইলস চিকিৎসায় কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নেই।

 রিং লাইগেশন এবং লংগো অপারেশনের মাধ্যমে প্রায় ১০০% রোগীর মলদ্বারে কোনো রূপ কাটাছেড়া ছাড়া চিকিৎসা করা সম্ভব।

প্রচলিত অপারেশনে মলদ্বারের তিনটি মাংশ পিন্ড কাটতে হয়। যা আজকাল আমরা শুধু তাদের জন্যই করি যারা রিং লাইগেশন এর জন্য উপযুক্ত নয় এবং লংগো অপারেশন এর যন্ত্র কিনতে অক্ষম।

লেজার দিয়ে পাইলস অপারেশন প্রচলিত অপারেশনের মতই। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে এক্ষেত্রে লেজার বিম দিয়ে কাটা হয় এবং প্রচলিত অপারেশনে সার্জিক্যাল নাইফ দিয়ে কাটা হয়। 

প্রচলিত অপারেশনের ন্যায় লেজার অপারেশনেও তিনটি ক্ষত স্থান হবে। লেজার অপারেশনের পর সাধারণত অপারেশনের মতই ব্যথা হয়, ঘা শুকাতে ১-২ মাস সময় লাগে। এবং প্রচলিত অপারেশনের মতই একই ধরনের জ টিলতা দেখা দিতে পারে।

পাইলস চিকিৎসার জন্য বহু ধরনের পদ্ধতি রয়েছে। যেমন ইনজেকশন, রিংলাইগেশন, ইলেকট্রোকোয়াগুলেশন, আল্ট্রয়েড, ক্রায়োথেরাপি, ইনফ্রারেড ফটোকোয়াগুলেশন, এনাল ডাইলেটেশন, লেজার থেরাপি, প্রচলিত অপারেশন এবং লংগো অপারেশন।

সবধরনের পদ্ধতির মেরিট এবং ডিমেরিট বিবেচনা করলে এবং বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সার্জনদের প্র্যাকটিস বিবেচনা করলে তিনটি পদ্ধতি বেশি প্রচলিত। আর তা হচ্ছে রিংলাইগেশন, লংগো অপারেশন ও প্রচলিত অপারেশন। 

রিংলাইগেশন ও লংগো অপারেশনে মলদ্বারে কোনরূপ কাটাছেড়া ছাড়াই ৯০-৯৫% রোগীর পাইলস রোগের সমাধান সম্ভব।


পাইলস এর ঔষধ

পাইলস রোগ সারাতে কিছু এলোপ্যাথিক ঔষধ রয়েছে। পাইলস হলে মলদ্বারে তীব্র জ্বালা, ব্যথা, চুলকানি, রক্তপাত সবকিছু উপসর্গ নিরাময় করে। তাহলে চলুন দেখে নেই পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম গুলি 

1) Normanal 500mg:

পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের মধ্যে এটি খুব দুর্দান্ত কাজ করে। যেসব পাইলস রোগীদের মলদ্বারে ফোলা, তীব্র জ্বালা যন্ত্রণা, পায়খানা করার পর রক্ত যাওয়া প্রচুর ব্যথা হয়। তারা এই ওষুধটি সেবন করতে পারেন। পাইলস একদম সেরে যাবে।


খাওয়ার নিয়ম:

এটি সকালে ২ টো, দুপুরে ২ টো, রাত্রে ২ টো করে একমাস খেতে হবে।

যখন স্বাভাবিক হয়ে আসবে অর্থাৎ রক্তপাত থাকবে না, জ্বালাপোড়া থাকবেম না, তখন সকালে ১টি, দুপুরে ১টি , রাত্রে ১টি করে একমাস খেতে হবে।

পাইলস যখন আরো স্বাভাবিক হয়ে যাবে তখন সকালে ১টি ও রাত্রে ১টি এইভাবে একমাস খেতে হবে।

2) Daflon 1000mg: 

পাইলস এর চিকিৎসায় এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে পাইলসের সমস্যায় ভুগলে Daflon 1000mg খাবেন। 

খাওয়ার নিয়ম: 

তীব্র পাইলস হলে প্রথম চারদিন সকালে ১টি, দুপুরে ১টি, রাতে ১টি করে এটি খান। পরবর্তী তিনদিন সকালে ১টি ও রাতে ১টি করে খান।

দীর্ঘস্থায়ী পাইলসের জন্য সকালে ১টি করে তিনমাস খান।

3) Daflon 500mg:

পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের মধ্যে এটি একটি ওষুধ, যা পাইলস ভালো করে। 


খাওয়ার নিয়ম: 

এই ওষুধটি সকালে ২টো, দুপুরে ২টো, রাতে ২টো করে তিনদিন খাবেন। 

তারপর সকালে ২টো, রাতে ২টো করে তিনদিন খাবেন।

তারপরে সকালে ১টি ও রাতে ১টি করে টানা পনেরো দিন খাবেন।

৪) Lignocain gel:

যেসব পাইলস রোগীরা পায়খানা করার সময় জ্বালা যন্ত্রণা কমানোর জন্য এই Gel টি ভালো কাজ করে। পায়খানা করতে যাওয়া ১৫ মিনিট আগে এই gel টি ব্যবহার করুন।

৫) Erian: 

পাইলস এর কারণে ব্যথা, জ্বালা বা চুলকানি হলে এটি ব্যবহার করুন উপশম পাবে। এই মলমটি ভিতরে নির্দেশিকা পড়ে ব্যবহার করুন। 

৬) Osmolax:

পাইলস থাকলে অবশ্যই কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে তাই এই সিরাপটি খেতে হবে। এটি প্রতিদিন রাতে তিন চামচ খেতে হবে।


পাইলস এর ছবি

অনেকেই পাইলস এর ছবি দেখতে চায়। পাইলস দেখতে কেমন হয় তাদের জন্য নিচে পাইলসের ছবি দেওয়া হলঃ


পাইলস এর চিকিৎসা কোথায় ভালো হয়

পাইলস এর চিকিৎসা কোথায় ভালো হয়

পাইলস এর চিকিৎসা কোথায় ভালো হয়


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post