সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বেতন কত

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বেতন বর্তমানে বাংলাদেশি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। কেননা সিঙ্গাপুরে একজন সাধারণ শ্রমিকের বেসিক বেতন দেওয়া হয়, দৈনিক ১৯ থেকে ২২ ডলার। 

যা বাংলাদেশী টাকায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মত হয়। এক্ষেত্রে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই বেতন বাড়ানোর নানাবিধ উপায় রয়েছে।

কোন দেশে যাবার পূর্বে আমাদের মাথায় কিছু প্রশ্ন আসে তার মধ্যে অন্যতম একটি প্রশ্ন হল সেখানে গিয়ে আমি কত টাকা ইনকাম করতে পারবো। 

এই প্রশ্নটা সবার মাথায় আসাটাই স্বাভাবিক, কেননা এত টাকা খরচ করে স্বপ্নের দেশে পারি জমিয়ে যদি টাকা ইনকাম করা না হয় তাহলে যেন সব প্রচেষ্টায় বৃথা হয়ে যায়।

সিঙ্গাপুরের বেসিক বেতন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা হলেও বেশ কিছু উপায়ে আপনি এর থেকে অধিক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। 

একজন শ্রমিক যদি সম্পূর্ণ দক্ষ হয়ে থাকে তাহলে তাকে ওভারটাইম কাজের সুযোগ দেওয়া হয়। এবং এই ওভারটাইম কাজ করে একজন শ্রমিক তার বেসিক বেতনের অর্ধেকের মত ইনকাম করতে পারে।

বেসিক বেতনটা কম হওয়ার কারণে অনেকে দুশ্চিন্তা করেন, এক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা করার কোন কারন নেই, আপনি যে বিষয়ে কাজ করছেন। সে বিষয়ে আপনি অভিজ্ঞতা অর্জন করার পর আপনাকে বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হবে। 

এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয় মাস সময় নেওয়া হয়। ছয় মাস পর আপনার অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে আপনার বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হবে। 

আপনি যদি আগে থেকেই কাজে দক্ষ হয়ে থাকেন, আপনার কাজ যদি তাদের কাছে ভালো লেগে থাকে, তাহলে ছয় মাসের মধ্যে আপনাকে বেতন বৃদ্ধি করে দিবে এবং ওভারটাইমের সুযোগ করে দিবে।

তাই সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যাওয়ার আগে দেশ থেকে যেকোনো একটি কাজের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে যাওয়াটা সবথেকে বেশি ভালো। 

কোন কাজের উপর প্রশিক্ষণ নেয়া থাকলে সেখানে গিয়ে কাজ করাটা অনেক সুবিধা হয়। সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য দেশে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা সরকারিভাবে কাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। তাদের থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে খুব সহজে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট অধিক বেতন পেতে পারেন।

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বেতন কত

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কত দিন সময় লাগে

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে সর্বোচ্চ ৬০ দিন সময় লাগতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে সময় কিছুটা কম বেশি হতে পারে এমনটাই জানিয়েছেন সিঙ্গাপুর জনশক্তি মন্ত্রণালয়। তবে সাধারণভাবে ৬০ দিনের মধ্যে সিঙ্গাপুরে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যায়।

বেশ কিছু মানুষ সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাবার জন্য নকল এনআইডি কার্ড ও পাসপোর্ট ব্যবহার করে থাকে। যেগুলো তাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হলে তারা সেগুলো আটকে রাখেন। 

সেগুলো আটকে রেখে তদন্ত করা হয়। সম্পূর্ণ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেওয়া হয় না। সম্পূর্ণ তদন্ত শেষ করে যদি দেখা হয় সেটি সঠিক তাহলে দ্রুত সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া হয়।

এছাড়াও অনেক মানুষের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ঠিক থাকে না। কিছু মানুষ দেশের মধ্যে নানারকম ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত হয় এবং পরবর্তীতে তারা সিঙ্গাপুরে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে সেখানে যেতে চায়, সকল মানুষ গুলোকে তদন্তের আওতায় আনা হয়। তদন্ত শেষ করে যদি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সঠিক না হয় তাহলে তাদের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেওয়া হয় না।

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য প্রথমে একটি ভিসা এপ্লিকেশন করতে হবে।

অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটি অবশ্যই নির্ভুল হতে হবে এবং স্বাক্ষর পাসপোর্ট অনুযায়ী হতে হবে।

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য একটি বৈধ পাসপোর্ট লাগবে।

উল্লেখ্য যে পাসপোর্টে অবশ্যই দুইটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে। 

সর্বনিম্ন ৬ মাসের পাসপোর্ট মেয়াদ থাকতে হবে। 

ল্যাব থেকে উঠানো পাসপোর্ট সাইজের ছবি ৪ কপি।

ছবি তিন মাসের বেশি সময়ের হওয়া যাবে না।

ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড অবশ্যই সাদা হতে হবে।

যে কাজের উপর দক্ষতা সেই কাজের একটি প্রমাণ থাকতে হবে।

একটি বৈধ ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখানো লাগবে।

নিজের এবং পিতামাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।

কোভিড করোনা ভ্যাকসিন ডোজ কমপ্লিটের সার্টিফিকেট।

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য একজন নাগরিকের উপর তথ্য গুলো যথেষ্ট। উপর তথ্য গুলোর মধ্যে যদি কোনটি ভুল হয়ে থাকে, তাহলে আপনি সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাবেন না। 

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে হলে অবশ্যই ওপরের তথ্য গুলো নির্ভুল হতে হবে। অনেকেই নকল এনআইডি কার্ড করে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নেওয়ার চেষ্টা করে থাকে।

কোন ডকুমেন্টস ভুল দিলে পরবর্তীতে অনেক বড় বিপদের সম্মুখীন হতে হবে। ভুল ডকুমেন্টস এর মাধ্যমে যদি কোনভাবে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পৌঁছে থাকেন। 

তারপরও সেখান থেকে আপনাকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। পূর্বে এরকম অনেক নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে শুধুমাত্র ভুল ডকুমেন্টস দেওয়ার কারনে। তাই ভুল ডকুমেন্টস দিয়ে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি করা থেকে বিরত থাকুন।

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদনের নিয়ম

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার জন্য অবশ্যই সরকারি নিবন্ধিত এজেন্সি গুলোর মাধ্যমে আবেদন ফরম নিয়ে, তা পাসপোর্ট এর নাম ঠিকানা অনুযায়ী পূরণ করে জমা দিতে হবে। 

এক্ষেত্রে বিএনপি, অথবা বুয়েসেলের মাধ্যমে যদি করেন, তাহলে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফরম ডাউনলোড করে পূরণ করে আবেদন করতে পারবেন। আবার অনলাইনের মাধ্যমেও আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন। 

আবেদন করার জন্য অবশ্যই নিবন্ধন আইডি কার্ড এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো আবেদনপত্রের সঙ্গে এটাস্ট করতে হবে।

এক্ষেত্রে আপনাদের জেনে রাখা উচিত যে পাসপোর্ট এর নাম এবং ঠিকানা এবং আপনার ছবি অবশ্যই রিসেন্ট হতে হবে। সেই সাথে আপনার যে সমস্ত নামের অথবা এড্রেস যদি ভুল থাকে, তাহলে অবশ্যই তা আগে থেকেই সংশোধন করতে হবে। 

যদি কোন ধরনের ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে কিন্তু আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। তাই অবশ্যই আগে থেকেই এই সমস্ত ভুল ত্রুটিগুলো সংশোধন করে তারপরে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক ভিসার জন্য আবেদন করবেন।

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়

সিঙ্গাপুরে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা যাওয়ার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হল সিঙ্গাপুর জনশক্তি মন্ত্রণালয় এর প্রতিটি তথ্য আপডেট রাখা। 

সিঙ্গাপুর জনশক্তি মন্ত্রণালয় যখন তাদের শ্রমিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় সাথে সাথে আপনি সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে ভিসা সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবেন।

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নেওয়ার জন্য সব থেকে সহজ ব্যাপার হলো সেখানে অবস্থিত কোন পরিচিত নাগরিকের কাছে শরণাপন্ন হওয়া। কারণ এই পথটাই সবথেকে নিরাপদ। 

সিঙ্গাপুরে অবস্থিত কোন নাগরিকের থেকে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিলে সেটি নির্ভুল হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ থাকে। তাই অবশ্যই প্রথম অবস্থায় চেষ্টা করবেন সিঙ্গাপুরে অবস্থিত কোন পরিচিত নাগরিকের শরণাপন্ন হতে।

তবে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য অনেকেই অতি সহজ উপায় খুঁজতে গিয়ে ব্যাপক ভাবে প্রতারণার শিকার হয়ে থাকে। 

কেননা দেশের মধ্যে অনেক দালাল চক্র ফাঁদ পেতে বসে থাকে। দালালচক্র কম খরচেই সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য চুক্তি করে দেয়।

যারা দালাল চক্রের মাধ্যমে কম খরচে সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার চুক্তি করে, তারা ব্যাপক ভাবে প্রতারণা শিকার হয়। 

এভাবে প্রতারণার শিকার হয়ে বিদেশ থেকে বহু বাংলাদেশি শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছে। অবৈধ পথে বিদেশ যাওয়ার কারণে তাদেরকে সিঙ্গাপুর সরকার দেশে ফেরত পাঠিয়েছে।

তাই সিঙ্গাপুরে যাবার জন্য অতিরিক্ত সহজ উপায় না খোঁজা টাই বুদ্ধি মানের কাজ। একটি এজেন্সির মাধ্যমে সিঙ্গাপুর যেতে সর্বোচ্চ চার থেকে ছয় লক্ষ টাকা লাগবে। কিন্তু কিছু মানুষ অতি লোভের কারণে দালাল চক্রের প্রতারণায় পড়ে থাকে।

অনেক সময় দালাল চক্র অনেক ভালো কাজ দেওয়ার চুক্তি করে সেখানে গিয়ে অনেক কষ্টকর কাজ দিয়ে থাকে। হোটেল বা রেস্টুরেন্ট এর কাজ দেওয়ার কথা বলে তারা বাসা বাড়িতে কাজ দেয়, যা যা সত্যিই অনেক কষ্টদায়ক। তাই দালাল চক্র থেকে সাবধান থাকতে হবে।

সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা নিয়ে সতর্কতা

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে নানা ধরনের নানা প্রতারণামূলক কার্যকলাপ জড়িত আছে। তাই অবশ্যই সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হাতে পাওয়ার পরে, অনলাইন থেকে তা যাচাই বাছাই করে নিবেন। 

বর্তমানে অনেক দালাল রয়েছে যারা কিনা অশিক্ষিত মানুষদেরকে টুরিস্ট ভিসা অথবা স্টুডেন্ট ভিসা হাতে ধরিয়ে তারা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বলে চালিয়ে দেয়। অথবা শর্ট টাইম একটি ভিসা তৈরি করে এ সমস্ত মানুষদেরকে ঠকিয়ে থাকে। তাই অবশ্যই সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা যেকোনো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা অনলাইন থেকে যাচাই করে নিবেন।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post